রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাসে নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রী সংস্থা। এতদিন সংগঠনটির তেমন কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা না থাকলেও, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সময় একটি তথ্য ও সেবা কেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে সংগঠনটি নিজেদের উপস্থিতি জোরালোভাবে জানান দেয়।
কলেজের প্রধান ফটকের পাশে স্থাপিত কেন্দ্রটিতে পরীক্ষার্থীদের কলম, টিস্যু, আসন খোঁজার সহায়তা, এমনকি প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও রাখা হয়। ছাত্রীদের বিনীত ব্যবহার, সুসংগঠিত সেবাদান এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ—সবকিছু মিলিয়ে কেন্দ্রটি শিক্ষার্থীদের নজর কাড়ে। অনেক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকই জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন—এই ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ কারা নিচ্ছে।
সংগঠনটির নেতৃত্বে আছেন বাংলা বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থী মোসা. জুবাইদা জারা। তিনি বলেন, “আমরা চাই ছাত্রীরা শুধু পরীক্ষায় ভালো করুক, তা নয়—তারা যেন একজন আদর্শ মুসলিম নারী হিসেবে সমাজে আলো ছড়াতে পারে। আমাদের লক্ষ্য ছাত্রীদের ধর্মীয়, নৈতিক ও আর্থিক দিক থেকেও সহযোগিতা করা।”
তিনি আরও জানান, “আমরা অনেকদিন ধরেই নীরবে কাজ করে যাচ্ছিলাম। গত ১৬ বছর ধরে রাজনৈতিক দমন-পীড়নের কারণে রাজশাহী কলেজে প্রকাশ্যে কাজ করতে পারিনি। ছাত্রলীগের বাধা, ভয়ভীতি ও হেনস্তার মুখে সংগঠনের কার্যক্রম সীমিত রাখতে হয়েছিল। তবে জুলাই বিপ্লবের পর নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখন অবাধ সাংগঠনিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেই আমরা সামনে এসে কাজ করার সাহস পেয়েছি।”
এই আত্মপ্রকাশ ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। কেউ এটিকে ছাত্রীদের স্বার্থে একটি প্রয়োজনীয় সামাজিক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এর আদর্শিক অবস্থান ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
রাজশাহী কলেজের এক শিক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার বলেন, “তারা শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে—এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আশা করি, তারা পজিটিভ কাজের মাধ্যমে নিজেদের জায়গা তৈরি করবে এবং ছাত্রীর কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”